গাজার ৮০ বন্দিকে মুক্তি দিল ইসরাইল, ১০ জনের অবস্থা গুরুতর

ইসরাইলি সেনাবাহিনী বৃহস্পতিবার সকালে গাজা উপত্যকা থেকে আটক ৮০ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে। স্থানীয় সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা আনাদোলু এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই বন্দিদের গাজার দক্ষিণে খান ইউনিসের পূর্বে ইসরাইল-নিয়ন্ত্রিত কিসুফিম সীমান্ত দিয়ে মুক্তি দেওয়া হয়।
এদিকে গাজার একজন চিকিৎসক জানান, মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে অন্তত ১০ জনের শারীরিক অবস্থা গুরুতর। তাদেরকে দেইর আল-বালাহ শহরের আল-আকসা শহিদ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘মুক্তিপ্রাপ্তদের একজন চরম সংকটাপন্ন অবস্থায় আছেন। তিনি চলাফেরা করতে অক্ষম এবং তার শরীরে নির্যাতনের স্পষ্ট চিহ্ন রয়েছে’।
তবে ইসরাইল বা হামাসের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এর আগে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে একটি যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তির আওতায় গাজার বহু বন্দি বাসিন্দাকে মুক্তি দিয়েছিল ইসরাইল।
দখলদার ইসরাইলের হাতে এখনো কতজন গাজাবাসী বন্দি রয়েছে, তার সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে সংখ্যাটি হাজারেরও বেশি।
জানুয়ারির ওই যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তির অস্থায়ী মেয়াদ শেষ হতেই যুদ্ধবিরতি ভেঙে ইসরাইল গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় আবার হামলা শুরু করেছে। বর্বর বাহিনীর অব্যাহত হামলায় এ পর্যন্ত প্রায় ১,৫০০ ফিলিস্তিনি নিহত ও ৩,৭০০ জন আহত হয়েছেন।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনায় গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের বিতাড়নের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সম্প্রতি গাজায় হামলা আরও জোরদারের ঘোষণা দিয়েছেন। তার সেই ঘোষণা অনুযায়ী ইসরাইলি বর্বর বাহিনী গাজা, পশ্চিম তীরসহ ফিলিস্তিনের বিভিন্ন এলাকায় নির্বিচারে হামলা চালিয়ে ফিলিস্তিনি নারী-শিশু সবাইকে হত্যা করে যাচ্ছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরাইলের চালানো ভয়াবহ হামলায় এখন পর্যন্ত ৬১,৮০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালত (আইসিসি) গত নভেম্বরে নেতানিয়াহু ও তার সাবেক প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়োয়াভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।
এছাড়াও ইসরাইল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (ICJ) গাজায় গণহত্যার অভিযোগেও মামলার সম্মুখীন।